আন্তঃসাংস্কৃতিক মেলবন্ধনে ইতালিয়ান ভাষায় অনূদিত উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর “ টুনটুনির বইয়ের” নির্বাচিত গল্পঃ সাক্ষাৎকারে অমৃতা চৌধুরী
প্রোমোসাইক প্রকাশনার পক্ষ
থেকে আমি মিলেনা
রামপোলদি , অমৃতা চৌধুরীর যে
সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম তা
এখানে দেওয়া হল । প্রোমোসাইকের সাথে অমৃতা
চৌধুরী একসাথে কাজ
করেছে আর তারই
ফলশ্রুতি হিসেবে আমাদের
নতুন বই উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর(১৮৬৩ – ১৯১৫) “ফাভোলে বেঙ্গালেসি” ( বাংলার গল্প ) যা ইতালিয়ান
ভাষায় অনুদিত হয়েছে । উপেন্দ্রকিশোর ছিলেন
একজন অসামান্য সৃষ্টিশীল
ও সংস্কৃতমনস্ক মানুষ
, যিনি শিশুসাহিত্যিক হিসেবে
বিশেষভাবে পরিচিত ছিলেন , শুধু
তাই নয় এছাড়াও তিনি একাধারে
সঙ্গীতজ্ঞ ও সুরকার
হিসেবেও পরিচিত ছিলেন । তিনিই
প্রথম ভারতবর্ষে ছাপাখানা
গড়ে তোলেন । এছাড়া বহুল
প্রচলিত ভারতে প্রথম
ছোটদের জন্য সন্দেশ
পত্রিকার প্রচলনও তিনিই
করেন । এই পত্রিকা আজও
তাঁর প্রপৌত্র সন্দীপ
রায়ের ( চিত্রপরিচালক) তত্ত্বাবধানে
প্রকাশিত হয়ে চলেছে
সমানভাবে । উপেন্দ্রকিশোরের
“ টুনটুনির বই” এর নির্বাচিত গল্পগুলির
ইতালিয়ান ভাষায় অনুবাদ
প্রোমোসাইকের যে গুরুত্বপূর্ণ
ভিন্ন সংস্কৃতির মেলবন্ধনের প্রচেষ্টা
তাকেই আরো দৃঢ় করে
তোলে । এই গল্পগুলির মধ্যে দিয়ে
যে নীতিকথা সাধারণ
মানুষের কাছে পৌঁছয়
তা ইতালিতে স্বল্প
পরিচিত বাংলার সংস্কৃতিকে
জানতে আরো ভালোভাবে
সাহায্য করে ।
থেকে আমি মিলেনা
রামপোলদি , অমৃতা চৌধুরীর যে
সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম তা
এখানে দেওয়া হল । প্রোমোসাইকের সাথে অমৃতা
চৌধুরী একসাথে কাজ
করেছে আর তারই
ফলশ্রুতি হিসেবে আমাদের
নতুন বই উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর(১৮৬৩ – ১৯১৫) “ফাভোলে বেঙ্গালেসি” ( বাংলার গল্প ) যা ইতালিয়ান
ভাষায় অনুদিত হয়েছে । উপেন্দ্রকিশোর ছিলেন
একজন অসামান্য সৃষ্টিশীল
ও সংস্কৃতমনস্ক মানুষ
, যিনি শিশুসাহিত্যিক হিসেবে
বিশেষভাবে পরিচিত ছিলেন , শুধু
তাই নয় এছাড়াও তিনি একাধারে
সঙ্গীতজ্ঞ ও সুরকার
হিসেবেও পরিচিত ছিলেন । তিনিই
প্রথম ভারতবর্ষে ছাপাখানা
গড়ে তোলেন । এছাড়া বহুল
প্রচলিত ভারতে প্রথম
ছোটদের জন্য সন্দেশ
পত্রিকার প্রচলনও তিনিই
করেন । এই পত্রিকা আজও
তাঁর প্রপৌত্র সন্দীপ
রায়ের ( চিত্রপরিচালক) তত্ত্বাবধানে
প্রকাশিত হয়ে চলেছে
সমানভাবে । উপেন্দ্রকিশোরের
“ টুনটুনির বই” এর নির্বাচিত গল্পগুলির
ইতালিয়ান ভাষায় অনুবাদ
প্রোমোসাইকের যে গুরুত্বপূর্ণ
ভিন্ন সংস্কৃতির মেলবন্ধনের প্রচেষ্টা
তাকেই আরো দৃঢ় করে
তোলে । এই গল্পগুলির মধ্যে দিয়ে
যে নীতিকথা সাধারণ
মানুষের কাছে পৌঁছয়
তা ইতালিতে স্বল্প
পরিচিত বাংলার সংস্কৃতিকে
জানতে আরো ভালোভাবে
সাহায্য করে ।
১.
তুমি এই গল্পগুলিই কেন
অনুবাদের জন্য বেছে
নিয়েছ ?
তুমি এই গল্পগুলিই কেন
অনুবাদের জন্য বেছে
নিয়েছ ?
ছোটবেলা থেকেই আমি উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর “ টুনটুনির বই” এর
গল্পগুলি শুনে বড় হয়ে
উঠেছি । আমার মতে এই
গল্পগুলির মধ্যে দিয়ে
যে বার্তা লেখক
পাঠকদের কাছে পৌঁছতে চেয়েছেন তা
শুধুমাত্র বাংলা সংস্কৃতিতেই
সীমাবদ্ধ নয় তা সার্বজনীন । আর সেই
কারণেই আমি অনুবাদের
জন্য এই গল্পগুলি
বেছে নিই , কারণ আমার
মতে অনুবাদ সাহিত্যের
এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
রয়েছে বিভিন্ন জাতির
ও বিভিন্ন সংস্কৃতির
মানুষের মেলবন্ধনে ।
গল্পগুলি শুনে বড় হয়ে
উঠেছি । আমার মতে এই
গল্পগুলির মধ্যে দিয়ে
যে বার্তা লেখক
পাঠকদের কাছে পৌঁছতে চেয়েছেন তা
শুধুমাত্র বাংলা সংস্কৃতিতেই
সীমাবদ্ধ নয় তা সার্বজনীন । আর সেই
কারণেই আমি অনুবাদের
জন্য এই গল্পগুলি
বেছে নিই , কারণ আমার
মতে অনুবাদ সাহিত্যের
এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
রয়েছে বিভিন্ন জাতির
ও বিভিন্ন সংস্কৃতির
মানুষের মেলবন্ধনে ।
২. কিভাবে এই
গল্প বা উপকথাগুলি ভিন্ন সংস্কৃতির
মানুষের মধ্যে যোগস্থাপন করতে
পারে বলে তোমার
মনে হয় ?
গল্প বা উপকথাগুলি ভিন্ন সংস্কৃতির
মানুষের মধ্যে যোগস্থাপন করতে
পারে বলে তোমার
মনে হয় ?
গল্প বা উপকথা সবসময়ই মানুষের কথা
বলে । এর মূল উপাদান হিসেবে
আমরা পাই মানুষের
নৈতিক , সামাজিক ও সাংস্কৃতিক
অবস্থানের বিভিন্ন চিত্র
। পৃথিবীর প্রত্যেক দেশেরই
তাদের নিজস্ব উপকথা
আছে , যেখানে পশুপাখি মানুষের
মতো ব্যবহার করে ,
এমনকি নীতিগত দিক
দিয়েও কম বেশী তারা মানুষেরই মতো । তবে
প্রত্যেক দেশের প্রত্যেক
উপকথার বার্তা এক নয়
, কারণ তা এক
দেশ থেকে অন্যদেশে
বদলে যায় , গল্পের চরিত্রেরা
বদলায়, গল্প বলবার ধরণ
বদলায় আর ভিন্ন সংস্কৃতির ভিন্ন রূপ সেখানে ধরা
পরে । তবু এই এত
ভিন্নতা থাকা সত্ত্বেও
বিশ্বের সমস্ত উপকথার
গঠনই কিন্তু একই
ছাঁচে গড়া ।
বলে । এর মূল উপাদান হিসেবে
আমরা পাই মানুষের
নৈতিক , সামাজিক ও সাংস্কৃতিক
অবস্থানের বিভিন্ন চিত্র
। পৃথিবীর প্রত্যেক দেশেরই
তাদের নিজস্ব উপকথা
আছে , যেখানে পশুপাখি মানুষের
মতো ব্যবহার করে ,
এমনকি নীতিগত দিক
দিয়েও কম বেশী তারা মানুষেরই মতো । তবে
প্রত্যেক দেশের প্রত্যেক
উপকথার বার্তা এক নয়
, কারণ তা এক
দেশ থেকে অন্যদেশে
বদলে যায় , গল্পের চরিত্রেরা
বদলায়, গল্প বলবার ধরণ
বদলায় আর ভিন্ন সংস্কৃতির ভিন্ন রূপ সেখানে ধরা
পরে । তবু এই এত
ভিন্নতা থাকা সত্ত্বেও
বিশ্বের সমস্ত উপকথার
গঠনই কিন্তু একই
ছাঁচে গড়া ।
৩. এই গল্পগুলির মূল
বিষয়বস্তু কি নিয়ে ?
বিষয়বস্তু কি নিয়ে ?
এই গল্পগুলির বৈশিষ্ট্যই হল
যে পশুপাখি এখানে
মানুষের মতো ব্যবহার
করে এবং প্রত্যেকটি গল্পের
একটি করে নীতিকথা আছে ,
যার মূলে আছে
মানুষের সামাজিক ও
নৈতিক অবস্থানের কথা । এছাড়াও
এই গল্পগুলিতে পশুপাখিদের
মানুষের মতো ব্যবহার
মানুষের সাথে মিশে
একসাথে এই গল্পগুলির মূলকথা লিখেছে । এই
গল্পগুলির মধ্যে দিয়ে
যেমন একাধারে প্রকাশ
পেয়েছে হিংসা , লোভ , মিথ্যাচার ,
তেমনি আবার সংহতি
ও ভালো কাজের প্রচেষ্টা
শান্তি ও ঐক্যের বার্তাই
বহন করেছে বারে
বারে ।
যে পশুপাখি এখানে
মানুষের মতো ব্যবহার
করে এবং প্রত্যেকটি গল্পের
একটি করে নীতিকথা আছে ,
যার মূলে আছে
মানুষের সামাজিক ও
নৈতিক অবস্থানের কথা । এছাড়াও
এই গল্পগুলিতে পশুপাখিদের
মানুষের মতো ব্যবহার
মানুষের সাথে মিশে
একসাথে এই গল্পগুলির মূলকথা লিখেছে । এই
গল্পগুলির মধ্যে দিয়ে
যেমন একাধারে প্রকাশ
পেয়েছে হিংসা , লোভ , মিথ্যাচার ,
তেমনি আবার সংহতি
ও ভালো কাজের প্রচেষ্টা
শান্তি ও ঐক্যের বার্তাই
বহন করেছে বারে
বারে ।
গল্পগুলি থেকে কি শিখতে পারি
বলে তোমার মনে হয় ?
আমার মতে বড়দের
এই গল্পগুলি পড়ে
শেখা উচিত কিভাবে
প্রকৃতি ও পশুপাখিকে সংরক্ষণ
করা যেতে পারে
কারণ এই গল্পগুলিতে
আমরা দেখতে পাই
কিভাবে বারে বারে পশুপাখি
মানুষকে রক্ষা করে । তাছাড়াও
আমাদের প্রত্যেকটা গল্পের অন্তর্নিহিত
সামাজিক ও নৈতিক বার্তাকে আলাদাভাবে
দেখা উচিত । যেমন উদাহারণস্বরূপ বলা যেতে পারে “
বোকা কুমীরের কথা” এই
গল্পটিতে আমরা দেখতে
পাই মিথ্যে অহংকার
বা অন্যের থেকে
নিজেকে বড় ভাবা
নেহাতই নির্বুদ্ধিতার পরিচয়ই
বহন করে আবার
“নরহরি দাস” গল্পটিতে দেখা
যায় কিভাবে উপস্থিত
বুদ্ধি ও সঠিক চিন্তা মানুষের
জীবন বাঁচাতে সাহায্য
করে ।
এই গল্পগুলি পড়ে
শেখা উচিত কিভাবে
প্রকৃতি ও পশুপাখিকে সংরক্ষণ
করা যেতে পারে
কারণ এই গল্পগুলিতে
আমরা দেখতে পাই
কিভাবে বারে বারে পশুপাখি
মানুষকে রক্ষা করে । তাছাড়াও
আমাদের প্রত্যেকটা গল্পের অন্তর্নিহিত
সামাজিক ও নৈতিক বার্তাকে আলাদাভাবে
দেখা উচিত । যেমন উদাহারণস্বরূপ বলা যেতে পারে “
বোকা কুমীরের কথা” এই
গল্পটিতে আমরা দেখতে
পাই মিথ্যে অহংকার
বা অন্যের থেকে
নিজেকে বড় ভাবা
নেহাতই নির্বুদ্ধিতার পরিচয়ই
বহন করে আবার
“নরহরি দাস” গল্পটিতে দেখা
যায় কিভাবে উপস্থিত
বুদ্ধি ও সঠিক চিন্তা মানুষের
জীবন বাঁচাতে সাহায্য
করে ।
৫. তোমার কাছে ভিন্ন
সংস্কৃতির বিকাশে অনুবাদের গুরুত্ব
কি ?
সংস্কৃতির বিকাশে অনুবাদের গুরুত্ব
কি ?
আমার মতে ভিন্ন
সংস্কৃতির বিকাশে ও
নিজের দেশ ছাড়া
অন্যদেশের সংস্কৃতিকে জানবার
এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম
হল অনুবাদ সাহিত্য । এছাড়াও আমার
মনে হয় অনুবাদ
সাহিত্য দুই ভিন্ন সংস্কৃতির মধ্যে
মেলবন্ধনেও সাহায্য করে আর
এর মাধ্যমেই মানুষের
কাছে বিশ্বভ্রাতৃত্বের বার্তা
পৌঁছে যায় ।
সংস্কৃতির বিকাশে ও
নিজের দেশ ছাড়া
অন্যদেশের সংস্কৃতিকে জানবার
এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম
হল অনুবাদ সাহিত্য । এছাড়াও আমার
মনে হয় অনুবাদ
সাহিত্য দুই ভিন্ন সংস্কৃতির মধ্যে
মেলবন্ধনেও সাহায্য করে আর
এর মাধ্যমেই মানুষের
কাছে বিশ্বভ্রাতৃত্বের বার্তা
পৌঁছে যায় ।
৬. তোমার মতে সাহিত্যের
মধ্যে দিয়ে ইতালিতে
বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে কিভাবে
প্রতিবাদ গড়ে তোলা
যায় ?
মধ্যে দিয়ে ইতালিতে
বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে কিভাবে
প্রতিবাদ গড়ে তোলা
যায় ?
অনুবাদ সাহিত্যের হাত
ধরে ইতালিতে সহিষ্ণুতা
যেমন ছড়িয়ে দেওয়া
যায় তেমনি বর্ণবিদ্বেষের
বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ গড়ে
তোলা যায় বলে
আমার বিশ্বাস । বর্তমান ইতালির
ভোটের ফলাফল আরো বেশী
করে বিদেশী সাহিত্যের অনুবাদের দাবী
নিয়ে আসছে , বিশেষ করে
ছোটদের জন্য এটা
খুব গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ
বলে আমি মনে করি । কারণ এর ফলে তারা
ছোট থেকেই নিজের সংস্কৃতির
বাইরেও বিশ্বের অন্য
সংস্কৃতি সম্বন্ধে জানতে
পারবে । আর প্রত্যেক দেশের
সাহিত্যের মধ্যে দিয়েই
তাদের দেশের সৌন্দর্য ও
ঐশ্বর্য প্রকাশ পায়
ভীষণভাবে । কাজেই আমি মনে
করি অনুবাদের মাধ্যমে বহুমানুষের
অন্যদেশের মানুষের প্রতি
ভুল ধারণা ও
কুসংস্কার দূর হয়ে
যাবে । আর হয়তো
একদিন এইভাবেই এক
বর্ণবিদ্বেষীও একজন বিদেশীকে সম্মান
দিতে বাধ্য হবে ।
ধরে ইতালিতে সহিষ্ণুতা
যেমন ছড়িয়ে দেওয়া
যায় তেমনি বর্ণবিদ্বেষের
বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ গড়ে
তোলা যায় বলে
আমার বিশ্বাস । বর্তমান ইতালির
ভোটের ফলাফল আরো বেশী
করে বিদেশী সাহিত্যের অনুবাদের দাবী
নিয়ে আসছে , বিশেষ করে
ছোটদের জন্য এটা
খুব গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ
বলে আমি মনে করি । কারণ এর ফলে তারা
ছোট থেকেই নিজের সংস্কৃতির
বাইরেও বিশ্বের অন্য
সংস্কৃতি সম্বন্ধে জানতে
পারবে । আর প্রত্যেক দেশের
সাহিত্যের মধ্যে দিয়েই
তাদের দেশের সৌন্দর্য ও
ঐশ্বর্য প্রকাশ পায়
ভীষণভাবে । কাজেই আমি মনে
করি অনুবাদের মাধ্যমে বহুমানুষের
অন্যদেশের মানুষের প্রতি
ভুল ধারণা ও
কুসংস্কার দূর হয়ে
যাবে । আর হয়তো
একদিন এইভাবেই এক
বর্ণবিদ্বেষীও একজন বিদেশীকে সম্মান
দিতে বাধ্য হবে ।